২৬ তারিখ রাত ১১ tay সীতাকুন্ড যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে রওনা দেই আমরা ৫ জনের দল।ঠিক ৬ টায় সীতাকুন্ড বাজারে পৌঁছে যাই।এবং সেখান থেকেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়।বাজার থেকে নাস্তা সেরে চন্দ্রনাথ পাহাড় এর উদ্দেশ্যে সিনজি নিলাম।৫-১০মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম পাহাড়ের পাদদেশে।পাহাড় চড়া শুরু করার পর বুঝতে পারলাম যতটা সহজ ভেবেছিলাম সহজ হবে না পথ।অনেকটা পাহাড় চড়ার পর যখন একটা পাহাড়ে মন্দির দেখলাম,খুশি হয়ে চন্দ্রনাথ ভেবে বসলাম! 😑 পরে ডানে তাকিয়ে দেখি আরেকটা উঁচু পাহাড়ের মাথায় আরেকটা মন্দির!বীরুপাক্ষ কে চন্দ্রনাথ ভেবে ভুল করেছিলাম।তবে চন্দ্রনাথ এর চেয়ে বিরুপাক্ষ মন্দির ই আমাদের বেশি আকৃষ্ট করেছিল।মাঝ পথে বিরতি নিয়ে নিয়ে আনুমানিক দেড় ঘন্টার ভেতর পৌঁছে গেলাম চন্দ্রনাথ এর চূড়ায়।পাহাড়ের উপর থেকে সবুজ এর পাশাপাশি সাগর ও দেখা যাচ্ছিল। আর অবর্ণনীয় সৌন্দর্য্য 😍 সব ক্লান্তি কষ্ট এক নিমিষে দূর হয়ে যায় এই সৌন্দর্য্যের কাছে!পাহাড়ে খানিকটা সময় কাটিয়ে,ঝিরিয়ে বিশ্রাম নিয়ে আবার নেমে পড়লাম।নামার সময় সিঁড়ি পথ বেছে নিলাম।উঠার সময় বাম পাশের মাটির রাস্তা দিয়ে উঠা শ্রেয়।এই সময়ে ঝর্ণায় পানি থাকবে না বলে ইকো পার্কের রাস্তায় যাওয়া হয়নি। কেউ চাইলে ইকো পার্ক এর রাস্তা দিয়ে গিয়ে সুপ্তধারা ঝর্ণা ও দেখে আসতে পারেন।চন্দ্রনাথ থেকে নেমে সিনজি রিজার্ভ করলাম গুলিয়াখালী এর।আপ-ডাউন রিজার্ভ করে নিয়েছিলাম।গুলিয়াখালী পৌঁছালাম সাড়ে 12 টার মধ্যে।জোয়ার সকালে থাকে।জোয়ারের সময় আসতে চাইলে সকালে আসতে হবে এখানে।গুলিয়াখালী এর এক পাশে সবুজ কার্পেট এর ন্যায় ঘাস আর এক পাশে সাগর আপনাকে সুন্দরবন এর অনুভূতি দিবে।একদম ছবির মতন ই সুন্দর জায়গাটা। 😍 দুপুরে গুলিয়াখালী থেকে আবার CNG করে সীতাকুন্ড বাজারে এসে দুপুরের খাওয়া দাওয়া সারলাম।সাড়ে 3 টার মধ্যে সীতাকুন্ড ব্রীজ এর উপর থেকে লেগুনা করে মহামায়া এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।ভাড়া জনপ্রতি 40 করে।যেতে 1 ঘন্টার মত সময় লাগে। লেগুনা থেকে নেমে পুনরায় cng নিলাম মহামায়া লেক এর উদ্দেশ্যে। 15 টাকা ভাড়া যেতে 5 মিনিটের মত লাগলো।মহামায়া ইকো পার্ক এর প্রবেশ পথে ঝাউবন নজর কেড়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট! 😍 কায়াকিং করার জন্য বোট খালি হওয়ার এবং রোদ কমার অপেক্ষায় থাকলাম।দুঃখজনক ভাবে কায়াক খালি পেলাম না! 😞 তাই বোট এ করে মহামায়া লেক +ঝর্ণা ঘুরে আসলাম। অসাধারন সুন্দর মহামায়া!সারাদিনের ক্লান্তি প্রশান্তিতে রূপান্তরিত হলো।যদিও ঝর্ণায় বেশি পানি নেই এখন। তবুও ঝর্ণা টা ভালোই লাগলো। 😁 ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যার হয়ে গেল। মহামায়া থেকে সাড়ে 7 tay রওনা দিলাম মিরসরাই এর উদ্দেশ্যে। মিরসরাই বাস স্ট্যান্ড থেকে রাতের টিকেট করে আশেপাশে খাওয়া দাওয়া করে ঝিমিয়ে নিলাম।
খরচাপাতি : আমাদের ৫ জনের গ্রূপ ছিল।বাজেট ছিল ১৫০০ করে প্রতিজন। এবং কাটায় কাটায় ১৫০০ টাকা ই খরচ হয়েছে।বরং ১০০ টাকা আরো বেঁচে গিয়েছে!পয়সা উশুল একখানা ট্যুর ছিল। 😛 ঢাকা-চট্টগ্রাম বাস ভাড়া ৪৮০ টাকা।ট্রেনে গেলে খরচ আরো কিছুটা কমাতে পারবেন।আমি নারায়ণগঞ্জ থেকে সরাসরি ctg এর বাস এ গিয়েছি।ঢাকা সায়েদাবাদ বা কমলাপুর কাউন্টার পাবেন বাসের।
সতর্কতা : পাহাড়ে উঠার ক্ষেত্রে যাঁরা নতুন তাঁরা অবশ্যই উঠার আগে বাঁশ নিয়ে নিবেন সাথে। আর পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন পানি সাথে রাখুন।
যাঁদের স্কিন প্রব্লেম আছে গুলিয়াখালী তে খালি পায়ে হাঁটবেন না বা পা ভিজাবেন না। পা জ্বালা পোড়া করার সমূহ সম্ভাবনা আছে।
(পাহাড়ে উঠার সময় এর সৌন্দর্য্য দেখে যত খুশি হচ্ছিলাম আশেপাশে এত বোতল প্লাস্টিক এর কাগজ দেখে তত ই মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল!আর বাঙালি বিরিয়ানি প্রেমী কতটা হতে পারে তাঁর নিদর্শন রেখে গিয়েছে খুব ভালোমত ই!পাহাড় থেকে নামার সময় আমাদের বাঙালিদের খোদাই শিল্পের প্রতি অসীম ভালোবাসার নিদর্শন ও দেখতে পেলাম।পাহাড় খোদাই করে নাম লিখা, নিজে ব্যাচ বা ডিপার্টমেন্ট এর নাম লিখাটা কি খুব জরুরি!?আমাদের মত শিক্ষিত মানুষেরাই তো এসব করে যায়!দয়া করে নিজেদের প্রতিভা পাহাড়ের গায়ে প্রমাণ স্বরূপ রেখে যাবেন না।ময়লা ফেলতে সচেষ্ট হন একটু।পাহাড়ে-সাগরে বিরিয়ানি-চিপস এর প্যাকেট,বোতল ফেলে আসবেন না!)
লিখেছেন – Foujeya Yeasmin
যাব যাব করে যাওয়া হচ্ছে না। তবে খুব শিগ্রই যাব।
সময়ের আলোচিত ভ্রমনের জায়গা। 🙂